tanjil_

আমার ব্য‍র্থতার গল্গ ২

কোম্পানির নাম ছিলঃ
Crystal Cage Studio / Trimatric Creative Studio
৭ বছর আগে যখন ক্লাস ৯-১০ এ পড়তাম তখন একটু ফাস্ট ইন্টারনেট এর এক্সেস পাই, এর আগে 128Kbps চালাইতাম। তখন ধাম ধুম সব সায়েন্স ফিকশন মুভি নামাইতাম, আর দিন রাত দেখতাম। তো একদিন গ্রাভিটি মুভি দেখার পড়ে তো মাথা নষ্ট এইটা কেমনে করল? পরে আরও কয়েকটাতে দেখলাম রোবট এলিয়েন এইসব এত রিয়েল লাগে, এইসব কেমনে করে?
.
লাগাইলাম গুগল, ইউটিউব, পাইলাম অ্যাডোবি আফটার ইফেক্ট, প্রিমিয়ার প্র, ব্লেন্ডার আর Andrew Kramer এর টিউটোরিয়াল। এর চ্যানেল যা ভিডিও ছিল সব যে কয়বার দেখছি তার ইয়ত্তা নাই। যা যা ছিল সব করার চেষ্টা করতাম।
.
ওই সময় জানলাম এগুলাকে বলে VFX (Visual Effect)। ঘাটাঘাটি করে দেখলাম তখন বাংলাদেশ এ এইসব নিয়ে তেমন কাজ করে না কেউ। তখন মাথায় পোকা ঢুকে গেল এইসব এর, লেগে গেলাম শর্ট ফিল্ম বানাইতে। একটা VFX Studio মানে অনেক টাকা আর বাংলাদেশ এ হব আমি ফার্স্ট (ভুল ধারনা ছিল, ওই টাইমে অনেক এ এইরকম ট্রাই করছিল)। Trimatric Creative Studio নাম দিয়ে শুরু করে দেই।
.
তখন মুল প্রব্লেম যেটা ছিল আমার কম্পিউটার ছিল Pentium 4 এর। কোন গ্রাফিক্স কার্ড ছিল না পরে অনেক কষ্টে 4GB একটা মেনেজ করছিলাম ওইটা দিয়ে যতটুক করা যাইত করতাম। একটা সিন দেখা যাইত ২৪ ঘণ্টা লাগতেছে সেভ হইতে। আরেকটা ঝামেলা ছিল ক্যামেরা আর শুটিং গিয়ার। একটা DSLR এর জন্যও আমি মারাত্মক কষ্ট করছিলাম, কিন্তু পাই নাই। এতো টাকা ছিল না যে ভাড়া এনে কিছু করব। পরে এক ফ্রেন্ড এর কাছ থেকে একটা ডিজিটাল ক্যামেরা নিয়ে কোনরকম কিছু কাজ করতে পেরেছিলাম, তবে শর্টফিল্ম আর শেষ করা হয় নাই।
.
এর মাঝে গিয়ে ভর্তি হই সিলেট এর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ এ, আমার জীবন পুরা যায় যায় অবস্থা তখন। এত বাজে পরিবেশ, প্রেসার এ আমি পুরা ডিপ্রেশনে পড়ে যাই। আমার সব কিছু অফ হয়ে যায়, একদিন কলেজ এ গিয়ে দুইজন কলেজ ফ্রেন্ড কে নিয়ে গেট এর সামনে কিছু ভিডিও করে একটা SciFi Weapon Effect এর শর্ট ভিডিও বানাই, ওইটা স্যার রা দেখার পর আমাকে ডেকে আমার কাছে জবাব চান কেন আমি কলেজ এর সামনে এইসব করলাম। (যদিও যেদিন আমি TC এর জন্যও এপ্লাই করি তখন আবার প্রশংসা করেন, লাইফ আমার এত বিরক্ত কোন কিছু তে লাগে নাই ওই ব্যাবহার দেখে।)
.
যাইহোক, অনেক কষ্ট করে কলেজ চেঞ্জ করে এমসি কলেজ এ আসলাম। পরে আবার সবকিছু শুরু। Trimatric Creative Studio নাম পাল্টে নাম দিলাম Crystal Cage Studio। প্রোগ্রামিং এর পাশাপাশি ওইগুলা বেশি করতাম। এইগুলা করতে গিয়ে থ্রিডি স্পেস, থ্রিডি অবজেক্ট, থ্রিডি স্পেসে ক্যামেরা কিভাবে প্রোগ্রাম করা লাগে ওইটাও শিখে ফেলি, যা এখন আমার অনেক ওয়েবসাইট প্রোজেক্ট এ কাজে লাগে।
.
কলেজ থেকে বের হয়েই একটা জব অফার পাই। আমার এক ফ্রেন্ড আমার কাজ দেখে এক কোম্পানিকে বলে, তারা আমার কাজ দেখে আমাকে ডাকে, পরে জব টা পাই। ইন্টার্ভিউ তে বলি আমার এম্বিশন বাংলাদেশ এ বড় VFX Firm করা। পরে ওইখানে ওরা মিডিয়া সেকশন করে আমাকে বসায়। পরে ওইখানে বাংলা টিভি এর একটা মিউজিক ট্যালেন্ট হান্ট শো এর থ্রিডি ইন্ট্র এর কাজ করি যেটা UK তে বাংলা টিভি তে প্রচার হয়।
.
বছর খানেক এইসব এ কাজ করার পর আস্তে আস্তে আমি প্রাকটিসিং হই, এবং জানতে পারি যে, মিউজিক, আমি যে ধরনের ভিডিও করি তা হারাম। সাথে সাথে ছেড়ে দেই। এর পরে আর এইসব এর কাজ করি নাই। পুরোপুরি প্রোগ্রামিং এ মন দেই।
.
এই কাজ থেকে মনে হয় প্রায় ৫০ -৬০ হাজার টাকার মত আয় করি। অনেককে এইসব হাল্কা পাতলা শেখাই। যদিও এখন আর কাউকে এই পথে আসতে বলি না।
.
পরে আল্লাহ খুব দ্রুতই আমাকে কোটি টাকার বিজনেস উপহার দিয়েছেন। এমন না যে ওইটা দিয়ে আয় হইত না। হইত, তবে হালাল হইত না। শিক্ষা এইটাই যে, আমার যতটুক আয় করার ওইটা আমি আয় করবই, আমাকে শুধু হালাল মাধ্যম টা সিলেক্ট করে নিতে হবে। আর প্রয়োজনে হয়ত এম্বিশন পরিবর্তন হইতে পারে।
.
পুনশ্চঃ VFX এর কাজে মিউজিক এর প্রয়োজন হয়, ওইটার কারণে আমি নিজেই মিউজিক কম্পজিং শেখা শুরু করে দেই। যদিও মিউজিক আমাকে দিয়ে হয় নাই। আমার কিছু কাজ এখন ও ভিডিও সেকশন এ আছে।
.
ছবিঃ এই ছবিটা VFX এর কাজ যখন শুরু করি তখন এর। কিছু টাকা আয়ের পরে প্রথম IPS Panel এর মনিটর কিনি, বেটার কালার এর জন্য।

Sharing is caring

Hire Webermelon to:

– Build WordPress Website
– Website Design
– Website Redesign
– eCommerce Development
– Software Development
– Mobile app development

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top